ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা অক্টোবর ২০২৪-এ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। অক্টোবরের শুরুতে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করে, যার নাম দেওয়া হয় "অপারেশন ট্রু প্রমিস ২"। এই হামলার পেছনে ইরান বলেছে যে এটি ইসরায়েলি সেনাদের দ্বারা ইরানি ও মিত্র নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ।

ইরানি মিসাইলের লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি, বিশেষত নেভাতিম এয়ারবেস ও তেল আবিবের আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ মিসাইল আটকাতে সক্ষম হলেও কিছু মিসাইল গোয়েন্দা কেন্দ্রের কাছাকাছি আঘাত হানে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতি না হলেও উত্তেজনা বহুগুণে বেড়ে যায়।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কড়া প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের প্রতি কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয়।

ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত আরও ঘনীভূত হয়েছে। ইরান কর্তৃক অক্টোবরের মিসাইল হামলা বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য ছিল, কারণ এটি ইসরায়েলের বিভিন্ন কৌশলগত অঞ্চলে আঘাত হানে। বিশেষ করে, নেভাতিম এয়ারবেস ও তেল আবিবের আশেপাশে হামলায় সামান্য হলেও কিছু ক্ষতি হয় এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ইরানের দাবি, এই হামলা প্রতিশোধের প্রতীক; এটি ইসরায়েলের দ্বারা হিজবুল্লাহ ও হামাস নেতাদের হত্যার প্রতিক্রিয়া। ইসরায়েল বরাবরই তার আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আক্রমণাত্মক কৌশল নিয়েছে, যা ইরানের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছে এবং ইরানের প্রতি কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে অধিকাংশ মিসাইল সফলভাবে প্রতিহত করা গেছে, তবে কিছু মিসাইলের আঘাত শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে, যা জনজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে পাল্টা আক্রমণের সম্ভাবনা বেড়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের এই সংঘাত শুধুমাত্র দুটি দেশের জন্য নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা তেলের বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় নতুন সংকট তৈরি করতে পারে। 

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ইরানের এই হামলার কারণে কিছুটা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। যদিও ইসরায়েল অনেক মিসাইল আটকাতে সক্ষম হয়েছে, কিছু মিসাইল আঘাত হানায় তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।